ব্রেকিং নিউজঃ অবশেষে চীনের সুপার স্পেশালিস্ট হসপিটাল কোথায় হচ্ছে জানা গেল

সকল জল্পনা কল্পনা শেষে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের নীলফামারী জেলায় চীন সরকারের অর্থায়নে এক হাজার শয্যার একটি আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ হতে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনার স্থান হিসেবে প্রস্তাবিত হয়েছে নীলফামারী জেলা। এখন প্রস্তুতিমূলক কাজ চলছে, এবং আশা করা হচ্ছে শিগগিরই এই হাসপাতালের নির্মাণকাজ শুরু হবে।”

রবিবার (২০ এপ্রিল)স্বাস্থ্য বিভাগ সুত্রে জানা যায়, নীলফামারীর দারোয়ানী নামক স্থানে ৫৩ একর সরকারি খাস জমি পতিত রয়েছে। সেখান থেকে ২৫ একর জমি চীনা হাসপাতাল নির্মানের প্রস্তাবনা করা হয়েছে। যা সকল দিকে থেকে গ্রহনযোগ্যতা পেয়েছে।

নীলফামারী জেলা প্রশাসক মহম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন রংপুর বিভাগীয় কমিশন নীলফামারীর দারোয়ানীস্থ খাস জমি এলাকাটি পরিদর্শন করেন। পাশাপাশি জমির হালহকিত সব কিছু অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেস্টার দপ্তরে প্রেরণ করা হয়। সেখান থেকে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে নীলফামারীর স্থানটি চীনা হাসপাতালের জন্য প্রস্তবিত করা হয়েছে।

সুত্রমতে প্রধান উপদেস্টার দপ্তরের উপসচিব শাহীন আক্তার সুমীর স্বাক্ষরিত একটি পত্র ১৭ এপ্রিল ইস্যু করা হয়। সেখানে বলা হয় সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা চীন সফর করেছেন। উক্ত সফরে চীন সরকার বাংলাদেশে হাসপাতাল নির্মাণ সহ স্বাস্থখাতে বড় বিনিময় /সহায়তার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। যার অংশ হিসাবে দেশের উত্তরবঙ্গে একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণ সহ একটি চিকিৎসা হাব গড়ে তোলা কথা সরকার বিবেচনা করছেন। উক্ত হাসপাতাল নির্মাণ সহ চিকিৎসা হাব গড়ে তোলার নিমিত্বে সৈয়দপুর বিমানবন্দর সংলগ্ন কাছাকাছি দূরত্বে রংপুর বা আশেপাশে জেলার খাস অথবা যে কোন সরকারি সংস্থার মালিকাধীন অন্তত ২৫ একর জমি প্রয়োজন। যা জরুরী ভিত্তিত্বে জানাতে বলা হয়। ফলে বিভাগীয় কমিশনার রংপুর সৈয়দপুর বিমান বন্দর থেকে ১০ মিনিটের দুরত্বে নীলফামারীর দারোয়ানী নামক স্থানটি পরিদর্শন শেষে প্রস্তবনা প্রেরণ করেন। এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর গত ১৯ এপ্রিল সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক মতবিনিময় সভায় বলেছেন চীনা হাসপাতালটি উত্তরাঞ্চলের নীলফামারী জেলায় প্রস্তাবনা করা হয়েছে। এখন প্রস্তুতিমূলক কাজ চলছে, এবং আশা করা হচ্ছে শিগগিরই এই হাসপাতালের নির্মাণকাজ শুরু হবে।জানা যায় চীনের একটি প্রতিনিধি দলও নীলফামারীর স্থানটি সরেজমিনে দেখে মতামত দিয়ে গেছেন। এই উদ্যোগকে একটি যুগান্তকারী পদপে হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যা “স্বাস্থ্যখাতের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য এটি একটি বড় মাইলফলক হবে। দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষ অত্যাধুনিক চিকিৎসা সুবিধা পাবেন নিজ এলাকাতেই, যা ঢাকা বা বড় শহরগুলোর ওপর চাপ কমাবে।”

সংশ্লিষ্টরা জানান, চীনের উপহার এক হাজার বিছানার বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মানে স্থান নির্ধারণে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে প্রাধাণ্য দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে হাসপাতালটি তিস্তা অববাহিকা অঞ্চল। যা চীনের বেধে দেয়া কিছু সর্তকে সামনে নিয়ে আসা হয়েছে। বিশেষ সুবিধা হলো সৈয়দপুরে বিমানবন্দর রয়েছে। চীন এটাই দেখছেন। পাশাপাশি নীলফামারীর দারোয়ানী থেকে উত্তরা ইপিজেডের দুরত্ব মাত্র দেড় কিলোমিটার । এই ইপিজেডে রয়েছে প্রায় ছয়শত চীনা নাগরিক। যা ইপিজেডে কর্মরত। সুত্র মতে নীলফামারীতে চীনা হাসপাতাল নির্মিত হলে অনেক রোগী এয়ার এ্যাম্বুলেন্সে আনা যাবে সৈয়দপুর বিমান্দর হয়ে। সড়ক পথে রংপুর বিভাগের ৮ জেলার সাথে নীলফামারীর মহাসড়ক সংযুক্ত রয়েছে। আন্তজার্তিক পর্যায়ে নেপাল, ভুটানের রোগীরা সড়ক পথে এবং এয়ার এ্যাম্বুলেন্সে সহজে বিশেষায়িত হাসপাতালের নিকটতম সৈয়দপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করতে পারবে।এ ছাড়া তিস্তা মহাপরিকল্পনা চীন যেহেতু বাস্তবায়ন করবে সেহেতু তিস্তা নদীপথে রাখা হবে স্পিটবোড এ্যাম্বুলেন্স। ঘাটে ভীড়ে রোগীকে কম দূরত্বে হেলিকপ্টার এ্যাম্বুলেন্স করে বিশেষায়িত হাসপাতালের অবতরন করতে পারবে কম দুরত্বের মধ্যেই।এ ছাড়া রেলপথ ব্যবস্থা থাকতে হবে। সে ক্ষেত্রে হাসপাতালটির স্থান হিসাবে নীলফামারীর দারোয়ানীর এলাকার জমিকে চিহিৃত করা হয়েছে। চীনের বিশেষায়িত হাসপাতালে যে সুবিধা থাকবে বলে নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা যায় তা হলো, এটা একটা আন্তজার্তিক পর্যায়ের বেইজড হসপিটাল হবে। যেখানে বাংলাদেশসহ নেপাল ভুটান ভারতের লোকজন চিকিৎসা করতে আসবে। যাকে টারশিয়ারি হাসপাতাল বলা হয়। বিষয়টি হলো এমন যে সমস্ত জটিল রোগের জন্য রোগীদের বাহিরের দেশে যেতে বলা হয় সেই সমস্ত অত্যাধুনিক টার্মিনাল কেয়ার বেইজড উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকবে এই বিশেষায়িত হাসপাতালে। যেমন নিউরো সার্জারি, নিউরোলজি, কিডনি বা নেফ্রলজি, ক্যান্সার, ব্রেস্ট ইনফারলিটি ডিপার্টমেন্টসহ লিভার কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন ও হার্টের সমস্ত বড় বড় অপারশন ট্রান্সপ্লান্টেশন এই সমস্ত রোগের জন্য এইসব হাসপাতাল।

সূূত্রমতে চীন বাংলাদেশে তিনটি হাসপাতাল নির্মান করতে চেয়েছেন। সর্বপ্রথমটা হবে উত্তরবঙ্গেই। আরেকটি চট্রগ্রামে ও ঢাকায় একটি। এই তিনটি হসপিটাল হবে সুপার স্পেশালিস্ট হসপিটাল।