স্ত্রীর কাছ থেকে কিডনি পেয়েই পরকীয়ায় জড়ালেন স্বামী!
ইত্তেফাক ডিজিটাল রিপোর্ট
প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০২৫, ০১:২০
https://www.ittefaq.com.bd/739510
স্ত্রীর কাছ থেকে কিডনি পেয়েই পরকীয়ায় জড়ালেন স্বামী!
সংসার মানেই ভালোবাসা, যত্ন আর বোঝাপড়ার এক চমৎকার জগৎ। সেখানে একজন স্ত্রী শুধু একজন সঙ্গীই নন- তিনি হয়ে ওঠেন পরিবারের প্রাণ, সন্তানদের অভিভাবক এবং স্বামীর পরম যত্নশীল একজন সাথি। সংসারে একজন স্ত্রী নিজেকে বিলিয়ে দেয়। তেমনি এক গল্প ৩৫ বছর বয়সী নারী উম্মে সাহেদীনা টুনির । যিনি নিজের কিডনি দিয়ে স্বামীর জীবন বাঁচিয়েছিলেন। তবে সেই স্বামী সুস্থ হয়ে উল্টা পরকীয়া ও অনলাইন জুয়ায় জড়িয়ে পড়লেন । শুধু তা-ই নয়, বরং স্ত্রীকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে প্রেমিকার সঙ্গে তিনি বসবাস করছেন ।
gnewsদৈনিক ইত্তেফাকের সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
সাভারের কলমা এলাকায় এমন অমানবিক ও হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে। অকৃতজ্ঞ স্বামী তারেকের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা করেছেন টুনি। তারেক গ্রেপ্তার হলেও বর্তমানে জামিনে আছেন।
বিয়ের দুই বছরের মাথায় দুঃসংবাদ পান টুনি। টুনি জানতে পারেন- তার স্বামী মোহাম্মদ তারেকের দুটি কিডনি প্রায় অচল। তাকে বাঁচাতে নিয়মিত ডায়ালাইসিস ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। অথচ এর মাত্র এক বছর আগে সন্তানের মা হয়েছেন টুনি, সংসার জীবনেরও সবে দুই বছর পার হয়েছে। এমন সময়ে এই দুঃসংবাদ তার জীবনের সবকিছু লন্ডভন্ড করে দেয়।
তবে, ভালোবাসার বাঁধন বড়ই শক্ত। টুনি স্বামীর হাত শক্ত করে ধরেন এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য তারেককে ভারতে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
porokiya-1-20250702220309
পরিকল্পনামাফিক তারেকের চিকিৎসা শুরু হয় ভারতে। কয়েক বছর পর চিকিৎসকরা জানান, রোগীকে বাঁচাতে হলে অতি দ্রুত কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হবে। তখন স্ত্রী টুনিই এগিয়ে আসেন। নিজের কিডনি দিয়ে তিনি স্বামীকে প্রাণে বাঁচান। টুনি ভেবেছিলেন, এবার হয়তো তার কষ্টের জীবনের সমাপ্তি ঘটেছে। কিন্তু তারেকের এমন কর্মকাণ্ড বিষয়টিকে ভুল প্রমাণ করেছে। সুস্থ হয়েই পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন তারেক । ডিভোর্সি এক নারীর প্রেমে আসক্ত হয়ে পড়েন। পাশাপাশি অনলাইন জুয়ার নেশাও পেয়ে বসে তাকে।
যেই স্ত্রীর কারণে নতুন জীবন তিনি ফিরে পেলেন, একসময় তাকেই মারধর করতে শুরু করেন। একপর্যায়ে মারধর করে স্ত্রীকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে পরকীয়া প্রেমিকার সঙ্গে গিয়ে ওঠেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালে পারিবারিকভাবে কলেজেপড়ুয়া তরুণী উম্মে সাহেদীনা টুনির সঙ্গে মালয়েশিয়া প্রবাসী তারেকের বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছর পরই তারেক ও টুনির সংসারে আলো করে একটি পুত্রসন্তান আসে। ছেলের নাম রাখা হয় আজমাইন দিব্য। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। তবে, ২০০৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে হঠাৎ করে তারেক অসুস্থ হয়ে পড়েন।
চিকিৎসকেরা জানান, তার দুটি কিডনিই প্রায় অচল। রোগীকে বাঁচাতে হলে অতি দ্রুত ডায়ালাইসিস শুরু করাতে হবে।
তবে, স্বামীর ডায়ালাইসিসে রাজি ছিলেন না টুনি। পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য স্বামীকে ভারতে নিয়ে যাবেন। কোনো ধরনের কালক্ষেপণ না করে এক সপ্তাহের মধ্যেই স্বামীকে নিয়ে ভারতে পাড়ি জমান। তামিলনাড়ুর বিখ্যাত সিএমসি হাসপাতালে তারেকের চিকিৎসা শুরু হয় ।
চিকিৎসকেরা জানান, তারেকের দুই কিডনি মিলিয়ে ২৪ পারসেন্ট সচল রয়েছে। এক্ষেত্রে মেডিসিনের মাধ্যমে আরও ১০ বছর তিনি চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারবেন। কিন্তু এরপর কিডনি প্রতিস্থাপন করতেই হবে।
poroliya-2-20250702220457
সুস্থ হয়েই স্ত্রীর ওপর শুরু হয় তারেকের নির্যাতন
এ অবস্থার মধ্যেও সদ্য সন্তানের মা হওয়া টুনি স্বামীর হাত শক্ত করে চেপে ধরেন। অভয় দেন, এই লড়াইয়ে কখনো হাত ছেড়ে দেবেন না। যেই কথা সেই কাজ। ঢাকায় ফিরে নিজ বাড়িতেই খোলেন হোম বিউটি পার্লার, পাশাপাশি বুটিকসের কাজ শুরু করেন। মাস শেষে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা উপার্জন করতেন। সেই টাকা ব্যয় করতেন তারেকের চিকিৎসায়। এভাবে বেশ কয়েক বছর কেটে যায়। নিজের জমানো টাকা, বিয়ের স্বর্ণালংকার বিক্রি করে স্বামীর চিকিৎসা চালিয়ে যান তিনি। চিকিৎসকদের পরামর্শমতে, টুনিকে বছরে তিনবার অসুস্থ তারেককে নিয়ে ভারতে যেতে হতো। প্রতিবার প্রায় দুই থেকে তিন লাখ টাকা খরচ হতো। যা পুরোটাই আসত নিজের আয় ও স্বর্ণালংকার বিক্রির টাকা থেকে।
অপরদিকে, অসুস্থ তারেক কোনো কাজকর্ম করতে পারতেন না। সম্পূর্ণ বেকার হয়ে পড়ায় একটা সময় পরিবারও তার ওপর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। কেবল স্ত্রী টুনি ও একমাত্র সন্তানই তার পাশে ছিল। একপর্যায়ে খরচ সামলাতে না পেরে নিজের মায়ের পেনশনের টাকাও স্বামীর চিকিৎসায় ব্যয় করেন টুনি। ২০০৮ থেকে ২০১৮- এই ১০ বছর ভারতেই চললো তারেকের চিকিৎসা। ২০১৯-এর শুরুতে চিকিৎসকেরা জানালেন, এবার তারেককে কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হবে। নয়তো ডায়ালাইসিস করেই বাকিটা জীবন বাঁচতে হবে।
পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গে টেস্টে মিললেও কেউ কিডনি দিতে রাজি হয়নি। পরবর্তীতে স্ত্রী টুনি সিদ্ধান্ত নিলেন, নিজের কিডনি দিয়ে হলেও স্বামীর প্রাণ বাঁচাবেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ২৬ অক্টোবর দিল্লির অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসক কৈলাশ নাথ সিং (কেএন সিং)-এর তত্ত্বাবধানে টুনি ও তারেকের কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন হয়।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে, স্ত্রীর কাছ থেকে কিডনি পেয়েই নিজের খোলস পাল্টে ফেলেন তারেক। এরপর বের হয়ে আসতে থাকে তার ভয়ংকর রূপ। শুরু করেন টুনির ওপর নির্যাতন।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে টুনি বলেন, তারেককে কিডনি দেওয়ার পর আমার শারীরিক অবস্থা ক্রমশ অবনতির দিকে চলে যায়। সাতদিন আইসিইউতে রাখা হয়। আইসিইউ থেকে কেবিনে নিয়ে আসার পরই যেন অন্য এক তারেককে আবিষ্কার করলাম। যেই মানুষটার জন্য আমার সবকিছু ত্যাগ করেছি, নিজের জীবন দিয়ে হলেও তাকে বাঁচাতে চেয়েছি; সেই কিনা কিডনি পেয়ে সুস্থ হয়েই হাসপাতালে আমার সঙ্গে চিৎকার করতে শুরু করল, মারতে উদ্যত হলো। আমার এক খালা কেন অপারেশনের আগে টাকা পাঠাতে দেরি করেছিল- এমনটা বলে চিল্লাচিল্লি করলো।
porokiya-3-20250702220538
সেদিন তারেকের এমন কর্মকাণ্ড দেখে হাসপাতালের চিকিৎসকরাও অবাক হন। টুনির ভাষ্য, এরপর আমাদের দুজনকে সেই চিকিৎসক তার চেম্বারে ডেকে নেন, যিনি অপারেশনটা করেছিলেন। সেখানে তারেককে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘যদি তোমার মা হয় তোমার জন্মদাতা, এই নারী তোমার জীবনদাতা। এর কারণে তুমি পুনরায় জীবন পেয়েছ, সুস্থতা ফিরে পেয়েছ। তার সঙ্গে কীভাবে এমন দুর্ব্যবহার করতে পারলে । এরপর চুপ হয়ে যান তারেক। পরে আমরা দেশে ফিরে আসি।
ঢাকায় ফেরার পরই টুনির জীবনে নেমে আসে নরক। টুনি বলেন- সুস্থ হয়ে তারেক নতুন কোনো চাকরি কিংবা ব্যবসা শুরু তো দূরের কথা উল্টো স্ত্রীকে চাপ দেন উপার্জনের সব টাকা তার হাতে তুলে দিতে এবং শ্বশুরবাড়ি থেকে আরও টাকা নিয়ে আসতে। একপর্যায়ে অনলাইন জুয়া ও পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ে তারেক। যেই স্ত্রীর জন্য নিজের জীবন ফিরে পেলেন, তার গায়ে হাত তুলতে শুরু করেন।
টুনি আরও বলেন, বিভিন্ন সময় কাজের অজুহাতে ঢাকায় গিয়ে সময় কাটাত তারেক। একসময় জানতে পারি, তাহমিনা নামের একজন ডিভোর্সি নারীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়ায় লিপ্ত সে। তারেকের মোবাইল ঘেঁটে এসবের প্রমাণও পাই। বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞাসা করলে, সে নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। একপর্যায়ে আমাকে পুরো বাড়ি তার নামে লিখে দিয়ে ডিভোর্স দেওয়ার জন্য চাপ দেয়।
এদিকে, গত ২ ফেব্রুয়ারি স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে সাভার থানায় গিয়ে তারেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন টুনি। কিন্তু এরপরই আবারও নিজের খোলস পাল্টে ফেলেন ধূর্ত তারেক। টুনিকে বুঝিয়ে একদিন পরেই (৪ ফেব্রুয়ারি) থানায় মুচলেকা দিয়ে সেই অভিযোগ তুলে ফেলেন তিনি।
বাড়িতে স্ত্রীকে নিয়ে যাওয়ার পর এবার নির্যাতনের পরিমাণ আরও বেড়ে যায় তারেকের। এক পর্যায়ে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে নিজের বাবার বাড়িতে ওঠেন টুনি। এরপর ২২ এপ্রিল তারেকের বিরুদ্ধে ঢাকার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যৌতুক ও নারী নির্যাতনের মামলা দায়ের করেন। ২৪ এপ্রিল সেই মামলায় তারেক গ্রেপ্তার হন। গত ৪ জুন এক মাস কারাগারে থাকার পর জামিনে মুক্ত হন তিনি। জামিনে মুক্ত হয়েই পরকীয়া প্রেমিকার বাড়িতে গিয়ে ওঠেন তারেক। সেখান থেকেই স্ত্রীকে চাপ দেন ডিভোর্স দিয়ে বাড়িটা তার নামে লিখে দেওয়ার জন্য।
এ প্রসঙ্গে টুনি বলেন, আমার স্বামীকে আমি সবসময় ফেরেশতার মতো মনে করতাম। ভাবতাম, তিনি কখনোই মিথ্যা বলেন না। তবে, আমার পরিবারের মানুষ ধাপে ধাপে সতর্ক করেছিল। কারো কথা কানে নিইনি। বরং তারেকের কথায়, অনেক সময় পরিবারের মানুষদের সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেছি। অথচ সেই মানুষটা আজ আমার সব কেড়ে নিল। তাকে কিডনি দেওয়ার পরে আমার শারীরিক অবস্থাও দিনদিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। চিকিৎসকেরাও নানাভাবে সতর্ক করেছেন।
তিনি আরও বলেন, আমি জানি, সুস্থভাবে হয়তো বেশিদিন আর বাঁচতে পারব না। তবুও যেই মানুষটার কষ্ট কখনো নিজের চোখে দেখতে পারতাম না, যার জন্য সবকিছু ত্যাগ করেছি, সেই কিনা আমাকে এভাবে ঠকালো! আমার পেটে অপারেশনের জায়গাতে লাথি মারলো…! আমি চাই না, আমার মতো পরিণতি আর কোনো মেয়ের হোক। আর কোনো মেয়ে যেন ভালোবাসায় অন্ধ হয়ে নিজের জীবনকে এমন অন্ধকারে না ঠেলে দেয়।’
savar-20250703004351
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তারেক-টুনির এক প্রতিবেশী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিয়ের পর থেকেই দেখেছি- টুনি আপা তার স্বামীর জন্য সবকিছু ত্যাগ করেছেন। তার যখন বিয়ে হয়, তখন বয়স ছিল ১৬-১৭ বছর। দুই বছরের মাথায় জানতে পারেন স্বামীর দুটি কিডনি অচল। তবুও স্বামীকে ফেলে রেখে যাননি। নিজের বাড়িতেই বিউটি পার্লার দিয়েছেন, বুটিকসের কাজ করেছেন। যা আয় করেছেন, তা দিয়ে স্বামীর চিকিৎসা চালিয়েছেন। পরে যখন চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেছে, তখন নিজের কিডনি দিয়ে তারেকের প্রাণ বাঁচিয়েছেন। অথচ, সুস্থ হওয়ার পর প্রায়ই দেখতাম, টুনি আপাকে নির্যাতন করত। পরে জানতে পারলাম- তিনি পরকীয়া ও অনলাইন জুয়ায় আসক্ত। টুনি আপাকে মারধর করতো টাকা ও বাড়িটা লিখে দেওয়ার জন্য।
এ প্রসঙ্গে টুনির মা বলেন, পারিবারিকভাবে আমাদের আর্থিক অবস্থা সচ্ছল ছিল। তারেকের চিকিৎসায় প্রতি বছর গড়ে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা খরচ হতো। সেই টাকা টুনি কখনো আমাদের থেকেও নিয়ে যেতো। আমার পেনশনের পুরো অর্থ তারেকের চিকিৎসায় খরচ করেছি। একটি ফ্ল্যাট বিক্রি করে টুনিদের থাকার জন্য বিল্ডিং তুলে দিয়েছিলাম। সেই বাড়ির অর্ধেক মেয়ের নামে আর বাকি অর্ধেক তারেকের নামে। অথচ আজ সেই বাড়ি নিজের নামে লিখে দেওয়ার জন্য আমার মেয়েকে নির্যাতন করছে, পরকীয়া প্রেমিকার সঙ্গে থাকছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা তারেকের প্রতারণার কঠিন শাস্তি চাই। যেন আমার মেয়ের মতো কোনো মেয়ের জীবন এভাবে ধ্বংস না হয়।
মামলা প্রসঙ্গে টুনির আইনজীবী নেহার ফারুক বলেন, দিনের পর দিন আমার বাদীকে নির্যাতন করে গেছেন তারেক। একটা মানুষ কতটা অকৃতজ্ঞ হলে, যার দয়ায় আজ তিনি বেঁচে আছেন, তার সঙ্গেই এমন করতে পারেন? আমরা এখনো মামলার চার্জশিট হাতে পাইনি। চার্জশিট হাতে পেলেই তারেকের জামিন বাতিলের আবেদন করব। আমার বিশ্বাস, এই ঘটনায় আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করবেন আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী ইশরাত হাসান টুনি-তারেকের এই ঘটনাকে অত্যন্ত মর্মান্তিক বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, যেই নারী তারেককে প্রাণে বাঁচাতে নিজের কিডনি দিয়েছেন, বিয়ের দুই বছর পর স্বামীর এমন অবস্থা আবিষ্কার করেও হাত ছেড়ে যাননি, অথচ সুস্থ হয়ে কিনা তার ওপরই নির্যাতন শুরু করেছেন। এ ধরনের প্রতারকদের কারণে স্বামী-স্ত্রীর সত্যিকারের ভালোবাসার প্রতিও মানুষের অবিশ্বাস তৈরি হয়।
ইশরাত হাসান বলেন, কেবল নারী নির্যাতন নয়, টুনির উচিত মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইনেও তারেকের বিরুদ্ধে মামলা করা। কারণ, প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তিনি স্ত্রীর কিডনি নিয়েছেন, পরে তার ওপর নির্যাতন শুরু করেছেন। এমনকি বিয়ের এত বছরেও স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ পাননি, সেই ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করতে পারেন। এসব ঘটনায় একজন আসামির দ্বারা বাদীর ক্ষতি সাধনেরও শঙ্কা থাকে। সেক্ষেত্রে টুনির উচিত হবে আদালতের কাছ থেকে সুরক্ষা আদেশ নেওয়া। যেন তিনি নিজ বাড়িতে সুরক্ষিত থাকতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি তারেক স্ত্রীর সঙ্গে যে অন্যায় করেছেন, তার এমন শাস্তি হওয়া উচিত যেন ভবিষ্যতে কোনো স্বামী তার স্ত্রীর সঙ্গে এ ধরনের প্রতারণার কথা দুঃস্বপ্নেও না ভাবতে পারেন।
এদিকে, জামিনে মুক্ত হওয়ার পর থেকে তারেকের খোঁজ নেই। নিজের নম্বরও পরিবর্তন করে ফেলেছেন তিনি । ফলে তার সঙ্গে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তার আইনজীবীর সঙ্গেও যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাকেও পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, তারেকের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কেউ এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। সূত্র- ঢাকা পোস্ট
 Viral News BD Most Popular Bangla News & Entertainment.
Viral News BD Most Popular Bangla News & Entertainment.
				 
						
					 
						
					 
						
					 
						
					 
						
					