ঋণের টাকা অস্বীকার করায় দুধের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে অচেতন করে ঘাড় ভেঙে হত্যা করা হয়েছে বরিশালের গৃহবধূ হাসিনা বেগমকে (৪০)। একমাত্র অভিযুক্ত আসামি ফিরোজ হাওলাদার (৩৬) বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) গ্রেপ্তারের পর পুলিশকে এ তথ্য জানিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল নগর গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর ছগির হোসেন।
গ্রেপ্তার ফিরোজ হাওলাদার বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া গ্রামের ইউসুফ হাওলাদারের ছেলে।
এর আগে বুধবার বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। চার বছর আগে মাসিক চার হাজার টাকা সুদ দেওয়ার শর্তে হাসিনা অভিযুক্ত ফিরোজের কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। সেই ঋণের টাকা অস্বীকার করায় গত সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া গ্রামের ফিরোজের বাসায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার বাদী হয়ে বন্দর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিহতের স্বামী ওমর আলী।
ইন্সপেক্টর ছগির হোসেন গ্রেপ্তার ফিরোজের বরাতে বলেন, গত সোমবার সদর উপজেলার চরকাউয়া গ্রামের ওমর আলীর স্ত্রীকে হত্যা করে ফিরোজ। কারণ আট মাস আগে হাসিনা বেগম ঋণের দেড় লাখ টাকা নেয়নি বলে জানান ফিরোজকে। টাকা অস্বীকার করায় তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে ফিরোজ। এরপর হাসিনা বেগমের বিপদ দূর ও মুখে হওয়া ঘা উপশম করতে এক হুজুরের পানিপড়া খাওয়ার পরামর্শ দেন ফিরোজ। এরপর গত সোমবার বিকেলে হুজুরের পানিপড়া খাওয়ার কথা বলে হাসিনাকে নিজ বাসায় ডেকে নেয় ফিরোজ।
তখন পানিপড়ার বদলে দুধে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে ওই নারীকে খেতে দেয়। এর কিছুক্ষণ পর হাসিনা অচেতন হয়ে পড়লে ঘাড় ভেঙে মেরে ফেলা হয়। এরপর গলায় রশি পেঁচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে ফিরোজ। মৃত্যু নিশ্চিতের পরে হাসিনার শরীরে থাকা গহনা খুলে নেয় অভিযুক্ত। এরপর হাসিনার লাশ পাশের খালে ফেলে দেয় ফিরোজ।
এদিকে হাসিনা বেগমকে হত্যায় জড়িত ব্যক্তির দ্রুত বিচারের দাবিতে বুধবার দুপুরে একঘণ্টা চরকাউয়া খেয়া পারাপার বন্ধ রেখে মানববন্ধন করে মাঝিমাল্লা সমিতিসহ এলাকাবাসী। এতে চরম দুর্ভোগেও পড়েন যাত্রীরা।