ব্রেকিং নিউজ : সরকারি কর্মচারীদের পথ চিরতরে ব’ন্ধ

সরকারি চাকরিজীবীদের একত্রে আন্দোলন বা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের পথ বন্ধ করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে “সরকারি চাকরি আইন (সংশোধন)” অধ্যাদেশের খসড়া উপস্থাপন করা হতে পারে, গ্রামীণ ব্যাংক (সংশোধন) অধ্যাদেশের পাশাপাশি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে, সংশোধিত আইনে নতুন একটি ধারা যুক্ত করা হচ্ছে, যেখানে তিনজনের বেশি সরকারি কর্মচারী একসঙ্গে কোনো ধরনের কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবেন না। এই আইন কার্যকর হলে সরকারি কর্মচারীদের দলবদ্ধ আন্দোলন বা বিক্ষোভ করার সুযোগ থাকবে না।

এ উদ্যোগের পেছনে মূলত রয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে সরকারি প্রশাসনের মধ্যেই ঘটে যাওয়া একের পর এক অস্থিরতা। ডিসি নিয়োগ ঘিরে উপসচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিক্ষোভ, সচিবালয়ে শোডাউন, এবং ফেসবুকে পাল্টাপাল্টি বিবৃতি—এসব ঘটনায় সরকার প্রশাসনের পেশাদারিত্ব নিয়ে উদ্বিগ্ন। ফলে সরকার কঠোর অবস্থান নিতে বাধ্য হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনপ্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, “যাঁরা এখন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশই চুক্তিভিত্তিক। তাঁদের দাবিদাওয়া নেই। তবে স্থায়ী কর্মকর্তাদের অনেক দাবিদাওয়া রয়েছে। কিন্তু এই আইন কার্যকর হলে তারা আইনি সীমাবদ্ধতায় পড়বেন।”

অন্যদিকে সংশোধনী প্রস্তাবে যুক্ত এক কর্মকর্তা বলেন, “সরকার আমাদের কণ্ঠ চিরতরে রুদ্ধ করতে চাচ্ছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পথ বন্ধ হলে তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া সহজ হবে না।”

উল্লেখ্য, আইন সংশোধনের আগে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সংশ্লিষ্ট খসড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখে থাকে। ইতোমধ্যে সরকারি চাকরি আইন সংশোধনের খসড়া এই কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।

এছাড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে সরকারি কর্মচারীদের ফেসবুক ব্যবহারে বিধিনিষেধ আরোপের হুঁশিয়ারিও দিয়েছে। বলা হয়েছে, সরকারের নির্দেশনা অমান্য করলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিভিন্ন শ্রেণির কর্মকর্তারা একাধিক কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, এই আইন কার্যকর হলে সরকারি প্রশাসনে আন্দোলন ও বিক্ষোভের রাজনীতি অনেকাংশেই বন্ধ হয়ে যাবে। তবে এতে কর্মচারীদের মত প্রকাশের অধিকার হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে অনেকেই আশঙ্কা করছেন।