আন্তর্জাতিক: পাকিস্তানে পণ্যবাহী শতাধিক ট্রাকের একটি বহরে বন্দুকধারীদের অতর্কিত হামলায় পাঁচ সেনাসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন। সশস্ত্র হামলার পর সন্ত্রাসীরা ট্রাক থেকে অনেক খাদ্যপণ্য লুট করে নিয়ে যায়। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদন জানায়, পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে খাদ্যবাহী ট্রাকের বহরে ২০ জনেরও বেশি বন্দুকধারী হামলা চালায়। এই হামলায় ছয়জন নিহত হন এবং ট্রাক থেকে পণ্য লুট করা হয় বলে কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। খবর আরব নিউজ এবং দ্য অরগানাইজারের।
সশস্ত্র পাহারায় থাকা এই পণ্যবাহী বহরটি আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী কুররাম জেলার পারাচিনার শহরের দিকে যাচ্ছিল। দীর্ঘদিন ধরে এই অঞ্চলটি সুন্নি ও শিয়া মুসলমানদের মধ্যকার সহিংসতায় বিপর্যস্ত। স্থানীয় সূত্র জানায়, গত বছরের জুলাই থেকে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাতে প্রায় ২৫০ জনের প্রাণহানি হয়েছে। হামলার সময় বন্দুকধারীরা ত্রাণবাহী বহরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বাহিনীর ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে। এতে এক ট্রাকচালক নিহত হন এবং আরও সাতজন আহত হন। একই সঙ্গে আধাসামরিক বাহিনীর একটি ইউনিটেও অতর্কিত হামলা চালানো হয়, যার ফলে পাঁচজন সেনা নিহত হন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা এএফপিকে জানান, ‘হামলাকারীরা সীমান্তরক্ষী বাহিনীর তিনটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় এক নারী পথচারীসহ মোট ১৫ জন আহত হয়েছেন, আর পাঁচজন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ ছয়জন প্রাণ হারিয়েছেন।’ হামলার পরপরই সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার গানশিপ পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের আস্তানা লক্ষ্য করে হামলা চালায়।উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের এই এলাকা দীর্ঘদিন ধরেই সহিংসতায় জর্জরিত। স্থানীয় সরকার ও উপজাতীয় নেতারা কয়েকবার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলেও তা কার্যকর হয়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলার প্রবেশ ও বহির্গমন পথ বন্ধ রাখা হয়েছে।
এ বছর ১ জানুয়ারি সর্বশেষ শান্তিচুক্তি ঘোষণা করা হলেও কয়েকদিন পরই একটি ত্রাণবাহী গাড়ির ওপর হামলার ঘটনা ঘটে, যাতে স্থানীয় কয়েকজন কর্মকর্তা ও তাদের নিরাপত্তারক্ষী আহত হন। এরপর প্রাদেশিক রাজধানী পেশোয়ারে মুখ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকে লোয়ার কুররামে নতুন করে অভিযান চালানোর নির্দেশ দেয়া হয়। মূলত, সুন্নি ও শিয়াদের মধ্যে বহু দশকের পুরোনো জমি সংক্রান্ত বিরোধ থেকেই সংঘাতের সূত্রপাত। বিশেষত শিয়া সম্প্রদায়ের মানুষরা বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন, কারণ প্রয়োজনীয় পরিষেবা নিতে গেলে তাদের বাধ্য হয়ে সুন্নি-সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকাগুলোর ভেতর দিয়ে যেতে হয়।
সূত্র: Channel 24